শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার ঘনঘটার মধ্যে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে শত্রুতা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’-এর অংশ হিসেবে ইরান এবার চালালো তাদের ২০তম হামলা, যেখানে প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হলো ‘খাইবার শেকান’ নামের উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হেনেছে, যা ইরানের সামরিক কৌশল বাস্তবায়নের দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রমাণ।
এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্য দিয়ে ইরান কৌশলগত বার্তা পাঠিয়েছে ইসরাইলকে। হামলার আগে ইরান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিল, অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইলের কোনো স্থানই আর নিরাপদ নয়। আর সেই হুঁশিয়ারির বাস্তব প্রতিফলনই ঘটেছে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে। হামলাটি ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের কথিত আঘাতের পরপরই চালানো হয়, বিশেষ করে ফোর্দো, নাতানজ ও এসফাহানের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার প্রতিক্রিয়ায়।
বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা শুধু প্রতিশোধ নয়, বরং প্রযুক্তি ও প্রতিরোধের শক্তির এক প্রদর্শন। খাইবার শেকান ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত পাল্লা এবং প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলা ভবিষ্যতের সংঘাতের জন্য একটি গেম চেঞ্জার হতে পারে।
তেল আবিব ও আশপাশের স্থানে লক্ষ্য করে ছোড়া এই ক্ষেপণাস্ত্র একদিকে যেমন সামরিক শক্তির প্রদর্শনী, অন্যদিকে ইরানের অভ্যন্তরীণ শক্তিমত্তা ও প্রস্তুতির প্রতীক। ইসরাইল এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে সূত্র বলছে, দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে এবং সম্ভাব্য পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই সংঘাত দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। এর প্রভাব ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান ও ইরাক পর্যন্ত। গোটা মধ্যপ্রাচ্য এখন অস্থিরতার দ্বারপ্রান্তে। ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, এই ধরণের হামলা আগামী দিনের কূটনীতি ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
Leave a Reply